কুবি প্রতিনিধি :: ১৯৭৫ সালে ঘাতক দালালরা বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যার সময় ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলকে ও হত্যা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থামাতে চেয়েছিল বলে মন্তব্য করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.এ এফ এম আবদুল মঈন।মঙ্গলবার ১৮ (অক্টোবর) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন ।
এসময় তিনি আরও বলেন, তারা ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল কিন্তু তারা পারেনি। এমন কর্মকাণ্ড দেশের জন্য লজ্জাকর। আর ভবিষ্যতে যেন এমন অপসংস্কৃতি কর্মকাণ্ড করতে না পারে তা আমাদের সকলে সচেতন হতে হবে এবং সতর্ক থাকতে এমন দিন যেন আমাদের সামনে আর না আসে।
এর আগে সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি আনন্দ র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তমঞ্চের সামনে এসে শেষ হয়।এসময় শেখ রাসেলের ছবিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।পরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন মুক্তমঞ্চে শিক্ষক, ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটেন।
কেক কাটার পর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এবং প্রশাসন ভবনে ৪১১ নাম্বার রুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শেখ রাসেল উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহ. আমিনুল ইসলাম আকন্দের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এফ এম আবদুল মঈন এবং প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, শেখ রাসেল ছিলেন বাংলাদেশের একটা সম্পদ। যারা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারকে হত্যা করে দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তারা সফল হতে পারেননি। এছাড়া, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ঘাতকরা সরকার পরিবর্তন করার জন্য যে হামলা চালিয়েছে, তাদের সেই উদ্দেশ্য ও পূরণ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ঘাতকরা অনেক চেষ্টা করছিল। যাতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ বছর পর আইন পরিবর্তন করে তার পরিবারের হত্যা বিচারের জন্য ঘাতকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এছাড়া, বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবী আছে যারা এনিয়ে বিনিয়ে কথা বলে দেশকে শাসন করতে চায়, তারা একটা বারও শেখ রাসেল ও বঙ্গবন্ধু হত্যা বিচারের কথা বলেন নাই। ঘাতকরা যদি সুযোগ পেত তাহলে তারা বাংলাদেশের নামসহ পরিবর্তন করে দিত।
আর ছাত্র-রাজনীতির প্রথম কাজ হলো পড়াশোনা করা। কারণ তোমরা আগামীর সম্পদ, এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সবসময় মেধাবী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেন। অবশ্যই রাজনীতি করা তোমার অধিকার, কিন্তু নিজেদের ক্যারিয়ার দিকে নজর দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য বলেন, বাঙালির কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেল আজকে দিনের জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শেখ রাসেল যখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন তখন বঙ্গবন্ধু দেশকে রক্ষার করার ব্যস্ত ছিলেন। তিনি তার সন্তানকে তেমন সময় দিতে পারেন নি। রাসেল ছোট বেলায় পিতার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। হয়তো আজকে তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ নেতৃত্ব দিতেন।
এছাড়া, আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন তাই আমাদের নিজেদের মধ্যে সব বিবাদ ভুলে গিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের পতাকা তলে সমাবেত হতে হবে। তাহলে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে সামনে দিকে এগিয়ে যাব।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয় শিশুরা।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শিশুদের পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।