হাবিবুর রহমান একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি নিজ উদ্যোগে ২৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করেন অটিজম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য স্কুল। স্কুলটি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সহায়তায় কোনো রকমে চলছে। তবে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পার হলেও স্কুলটি এমপিওভুক্ত হয়নি। এ অবস্থায় স্কুল পরিচালনা করতে চরম সংকটে পড়েছেন কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, নেত্রকোণা সদর উপজেলার সাজিউড়ায় ১৯৯৭ সালে ২০ শতাংশ জমিতে অটিজম ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষক হাবিবুর রহমান। বিদ্যালয়ে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রয়েছে ১৬৪ জন এবং শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ১৪ জন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ জন আবাসিক হিসেবে বিদ্যালয়ে থেকে লেখাপড়া করে আসছে।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা হাবিবুর রহমান বলেন, এমপিওভুক্তির জন্য বিভিন্ন সময়ে সরকারি নিয়ম মেনে অনেকবার আবেদন করা হয়েছে। কোনো কাজ হয়নি। ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিচালক-৭ আল মামুন মুর্শেদ স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠানো হয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের বরাবরে। এতেও স্কুলটির এমপিওভুক্তকরণ হয়নি। এছাড়া গত বছরের ৩১ জানুয়ারি সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান শেফালী স্কুলটির দৈন্যদশা ও এমপিওভুক্তকরণের বিষয় তুলে ধরে জাতীয় সংসদে ১ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড কথাও বলেছেন। তবুও স্কুলটি এমপিওভুক্ত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এ অবস্থায় শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা নেমে এসেছে। তাদের খুব কষ্টে জীবন কাটাতে হচ্ছে। আমাদের এই দৈন্য তুলে ধরার জন্য এবং স্কুলটি যেন ভবিষ্যতে এমপিওভুক্ত হয়, তার শেষ ভরসা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানাতেই আমি ১৫৯ কিলোমিটার পায়ে হাঁটা শুরু করেছি।
প্রতিদিন ২৫ কিলোমিটার হেঁটে সাত দিনে তিনি ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে পৌঁছতে সক্ষম হবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নেত্রকোণা জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুর রব খান ঠাকুর বলেন, জেলায় মোট ২৬টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে একমাত্র সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুর স্ত্রীর নামে প্রতিষ্ঠিত কামরুন্নেছা আশরাফ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়েছে। আমরা চাই অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও এমপিওভুক্ত করা হোক।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই হাবিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটা সফল হোক। প্রধানমন্ত্রী যেন বিষয়টাতে হস্তক্ষেপ করেন।